নিজস্ব প্রতিবেদক
চান্দিনা (কুমিল্লা)।
কুমিল্লার চান্দিনায় কামারখোলা গ্রামের একটি কাঁচা সড়ক উদ্ধারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, চান্দিনার মাইজখার ইউনিয়নের কামারখোলা গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ি থেকে ফসলি জমিতে ঢুকার একমাত্র কাঁচা সড়কের কিছু অংশ দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের মামুন নামের এক ব্যক্তি কালবার্টের উপরে পাকা গোসলখানা করে রাস্তার কিছু অংশ দখল করে রেখেছিলেন। তার সাথে পারিবারিক দন্ডে পাশের বাড়ির প্রবাসী মিজানের বউ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বাড়ির পশ্চিম অংশে টিনের বেড়া দিয়ে আরো ২ফুট পরিমান রাস্তা দখলে নিয়ে নেন। এছাড়াও বাড়ির ময়লা পানির লাইন রাস্তার উপরে দিয়ে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী করে রেখেছে।এতে করে গ্রামের শতভাগ মানুষ জমিতে চাষাবাদকৃত ফসল উঠিয়ে বাড়ি নিয়ে আসতে বেকায়দায় পরেছে।
গ্রামবাসী হাকিম ভূঁইয়া, আবু তাহের ভূঁইয়াসহ কয়েকজন বলেন, কামারখোলা উত্তরপাড়া ভূঁইয়া বাড়ির এই সড়কের উত্তরাংশে রয়েছে কমপক্ষে ২০০ একরেরও বেশি ফসলি জমি। সারা বছর এসব ফসলি জমিতে ধান, টমেটো, আখ, আলু, শীতকালীন শাকসবজিসহ নানা ফসল উৎপাদন করা হয়। পরবর্তী সময়ে কৃষকরা এসব উৎপাদিত ফসল ট্রাক্টর, ট্রলি, পিকআপ ভ্যানসহ নানা যানবাহনে বেচা বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে যেতেন। গ্রামটিতে ঢুকার মুখে প্রশস্ত রাস্তা থাকলেও মামুন নামের ব্যক্তিটি পানি নিষ্কাশনের ড্রেন ও সড়কের কিছু অংশ বেদখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। তার সাথে দন্দ্বে জরিয়ে মিজানের বউও বেড়া তৈরি করে রাস্তার বেহাল দশা করে রেখেছে। তারা জানায় মিজান এ গ্রামের বাগিনা,তারা কয়েকভাই প্রবাসে থেকে প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে। এতে করে আওয়ামী পন্থি প্রভাবশালীদের টাকা খাইয়ে গরিব মামুনের উপর বিভিন্ন সময় মামলা মোকাদ্দমা দিয়ে অত্যাচার করে যাচ্ছে। একাধিক শালিশ বৈঠক হলেও কেউই রাস্তা ছারেনি,এতে রাস্তা সংকুচিত হয়ে পড়ায় যান চলাচলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে গ্রামের সাধারণ কৃষক শ্রমিকরা ভোগান্তিতে পড়েছে।
এই অবস্থায় প্রবাসী মিজানুর রহমানের স্ত্রী চান্দিনা ইউএনওর কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
তার আত্মীয় ডিসি অফিসে থাকায় ভূমি কর্মকর্তাকে ফোন করিয়ে গত বুধবার বিকালে চান্দিনার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি দল এসে সড়কের কিছু অংশে থাকা মামুনের পাকা গোসল খানাটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। অপরদিকে মিজানের টিনের বেড়াটি রাস্তার উপরেই রয়েছে।
চান্দিনা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসি ল্যান্ড ফয়সাল আল নুর বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের কারণে সরেজমিনে তদন্ত করে দেখি সরকারি খাসজমি এবং রাস্তা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে তৈরি হয়েছে জনদুর্ভোগ। সড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের আগে, দখলদারকে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কথা কানে তোলেনি। পরে স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এদিকে মামুনসহ তার পরিবারে ৬ ভাইয়ের ৬শতক জায়গার উপর বসবাস। তারা ডিসি বরাবর খাস ড্রেনের উপর গোসলখানাটি ব্যবহারে আবেদন করেও শেষ রক্ষাটুকু পায়নি গরিব এই পরিবারটি। অসহায় পরিবারটি প্রশাসন এবং সরকারের নিকট ক্ষোভ রেখে বলেন, চান্দিনাসহ দেশের বৃহৎ খাশ জমি বেদখল থাকা সত্বেও অজোপারাগায়ে প্রভাবশালীদের কারণে ১ হাত পরিমান খাশ ড্রেন ব্যবহারে সঞ্চিত টাকা দিয়ে পরিবারের ব্যবহারের এই গোসল খানাটি ভেঙে দেওয়া অমানবিক। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে সঠিক বিচার পেতে আশাবাদী।