মোঃ আবুল কালাম আজাদ
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার চান্দিনায় একটি চারতলা বাসার ছাদে আপত্তিকর অবস্থায় এক প্রেমিক যুগলের ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে সোহেল নামের এক দারোয়ানকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতালে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। এর আগে গত শনিবার (১৬ আগস্ট) রাত ৯টায় চান্দিনা উপজেলা সদরের পল্লী বিদ্যুৎ রোডের একটি বাসায় ওই ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল মিয়া দেবীদ্বার উপজেলার সুলতপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর (গজারিয়া) গ্রামের ইমতিয়াজ মিয়ার ছেলে।
তিনি চান্দিনা পল্লী বিদ্যুৎ রোডের ইসলাম ট্রেডার্স নামের একটি ফার্মে দারোয়ানের চাকরি করতেন। শনিবার রাতে ইসলাম ট্রেডার্সের মালিক শিহাব মিয়ার বাসায় ওই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই বাসার নিচতলায় ভাড়ায় বসবাস করেন মাকসুদা আক্তার খুকি নামের এক নারী। তিনি স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কাজ করেন।
বড় বোন রত্না বেগম ও তার ছেলে আহাদ মিয়া (১৭) পার্শ্ববর্তী কোরপাই সাদাত জুট মিলের শ্রমিক। কাজের সুবাদে ওই মিলের নারী শ্রমিক ফেরদৌসী আক্তারের (২০) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে আহাদের। গত শনিবার রাত ৮টার দিকে প্রেমিকা ফেরদৌসীকে নিয়ে খালার বাসায় আসে আহাদ। ওই সময় তার খালা হাসপাতালে থাকায় বাসার ছাদে যায় ওই প্রেমিক যুগল।
এক পর্যায়ে দারোয়ান সোহেল বাসার ছাদে তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে মোবাইল ফোনে সেই দৃশ্য ধারণ ধারণ করে। এ সময় প্রেমিক যুগলের সঙ্গে সোহেলের ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সোহেলকে ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয় তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সোমবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই সোহেলের মৃত্যু হয়।
নিহত সোহেলের নিকটাত্মীয় আনিছ জানান, প্রেমিক যুগলের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করায় সোহেলের ওপর তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে বাসার ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে তাকে নিচে ফেলে দেয় তারা।
বাসার মালিক শিহাব বলেন, ‘শনিবার রাতে খবর পেয়ে আমি ঢাকা থেকে চান্দিনার বাসায় আসি। পরে পুলিশ আমাকে ঘটনার বিস্তারিত জানান। ওই প্রেমিক যুগলের কাউকেই আমি চিনি না। আর নিহত সোহেল আমার ফার্মে দারোয়ানের চাকরি করত।’
আহাদ মিয়ার খালা মাকসুদা আক্তার খুকি বলেন, ‘আমি হাসপাতালে যাওয়ার সময় বাসায় তালা দিয়ে যাই। রাত ৯টার দিকে বাসায় এসে দেখি এখানে অনেক মানুষ। পরে তাদের কাছ থেকে আমি ঘটনাটি শুনতে পাই। এ সময় আমি আমার বোনের ছেলে ও ওই মেয়েকে বাসায় পাইনি।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার রাতের ওই ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তখন আহতের পরিবার জানায়, চিকিৎসা শেষে তারা থানায় অভিযোগ করবে। সোমবার সকালে আহত ওই যুবকের মুত্যু হলে আমরা ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু নিহতের মা মামলা করবে না বলে জানিয়েছে।’
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: ০১৮২৯০৭৩০৬৬, ০১৭১৮১৬৫৯০৩
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত